Description
লাল চিনির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এর উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় কৃষকের সুদক্ষ হাতে, গ্রামের প্রাচীন পদ্ধতি অবলম্বন করে। যার কারনে এর প্রাকৃতিক গুনাগুন অক্ষুন্ন থাকে। এটি দেখতে লালচে, এর আর্দ্রতা একটু বেশি। অনেক সময় ক্রেতারা দেখতে সুন্দর না বলে এই চিনি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন না। কিন্তু দেশীয় চিনিকলে উৎপাদিত চিনি নিরাপদ এবং শিশু খাদ্য হিসেবে উপযোগী।
লাল চিনির উপকারিতা কি কিঃ
আখের দানাদার লাল চিনি সাদা ঝকঝকে চিনির বিকল্প। বাংলাদেশ খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষায় দেখা গেছে, আমদানিকৃত পরিশোধিত এবং দেশে উৎপাদিত পরিশোধিত ধবধবে সাদা চিনি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। নিচের টেবিলে একটি পরীক্ষার তুলনামূলক ফলাফলের আংশিক চিত্র তুলে ধরা হল-
বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ
আসুন নাল চিনি গ্রহনের উপকারিতা গুলো জেনে নেইঃ
লাল চিনির অনন্য স্বান্ধু উপকারিতার মধ্যে রয়েছে দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি, ঠান্ডা প্রতিরোধ, জরায়ু সংক্রমণের চিকিৎসা, হজমের উন্নতি, পেট ফাঁপা কমাতে এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করার ক্ষমতা। আসুন নীচে তাদের বিস্তারিত আলোচনা করি।
ক) মাসিকের অস্বস্তি উপশমেঃ
লাল চিনি এবং আদা মিশ্রিত করে কুসুম গরম পানির সাথে খেলে মাসিকের অস্বস্তিকর ব্যাথা দূর হয়। চীনের প্রাচীন চিকিৎসায় এর উড়োখ পাওয়া যায়।
খ) হাঁপানি রোগীদের জন্যঃ
পরম পানির সাথে লাল চিনি মিশিয়ে পান করলে হাঁপানির প্রদাহজনক দক্ষণগুলি দমন করা যায়। লাল চিনিতে অ্যান্টি-অ্যালার্জিক উপাদান রয়েছে যা হাঁপানি রোগিণীদের অসুস্থতার চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে।
গ) ওজন কমাতেঃ
আপনি যদি ওজন কমানোর চেষ্টা করেন, তাহলে কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার গ্রহন করতে হবে। লাল চিনিতে কম ক্যালোরি আছে, এবং এটি বিপাক প্রক্রিয়া ভাল করে তোলে। অতএব, এটি চিনি ত্যাগ না করেই ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ঘ) ত্বকের যত্নেঃ
ভিটামিন বি-১৯ নিয়াবিন, প্যান্টেরার্থেনিক অ্যাসিড এবং মিনারেল এর মত মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট লাল চিনিতে পাওয়া যায় যা আপনাকে প্রস্তু ত্বক পেতে এবং অ্যান্টি-এজিং উপাদান হিসাবে কাজ করতে সহায়তা করে। মরা চামড়া এবং ব্লক ছিদ্র দূর করতে ব্রাউন সুগার চাব হিসাবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
এছাড়াও, লাল চিনিতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে যা ব্যাকটেরিয়া এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে।
এবার জেনে নেই সাদা চিনির (White Sugar) কয়েকটি ক্ষতিকর দিকঃ
১) যেহেতু পরিশোধনের সময় চিনির মিনারেল বা প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান দূর হয়ে যায়। এতে করে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। নিউরন কোষগুলো ধীরে ধীরে মারা যায়। যা স্ট্রোক এর অন্যতম কারন।
২) ভিটামিন সরিয়ে ফেলায় শরীর পুষ্টি উপাদান পায় না।
৩) সাদা চিনিতে অতিরিক্ত পরিমাণে ফ্রূকক্টোজ থাকে। আর ফ্রূকক্টোজ হজম করাতে সাহায্য করে লিভার বা কলিজা। কিন্তু অতিরিক্ত ফ্রূকক্টোজ লিভার হজম করাতে না পারায় লিভারে তা ফ্যাট আকারে জমা হয়। এতে করে লিভার ড্যামেজ বা লিভার নষ্ট হয়ে যায়।
৪) চিনি পরিশোধনে ব্যবহার হয় সালফার আর হাড়ের গুড়ো যা কিডনি বিকলাঙ্গ করে দেয়।
৫) সালফার ইনসুলিন নিঃসরণে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে শরীরের গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং ডায়াবেটিস হয়।
সাদা চিনির এত অপকারিতা থাকার কারণেই মূলত সাদা চিনিকে বিশেষজ্ঞরা সাদা বিষ বা White Poison বলে।
সাদা চিনি বা রিফাইন করা চিনি যে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর সে সম্পর্কে ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন এক গবেষণাপত্র বের করেছিলেন।
চিনি রিফাইন করে সাদা করার জন্য চিনির সঙ্গে যুক্ত প্রাকৃতিক ভিটামিন ও মিনারেল সরিয়ে শুধু কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা রাখা হয়। কিন্তু শুধু কার্বোহাইড্রেট শরীর গ্রহণ করতে পারে না। মিনারেল ও ভিটামিনবিহীন কার্বোহাইড্রেট দেহের মধ্যে টক্সিক মেটাবোলাইট সৃষ্টি করে। এতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে। ফলে কোষ অক্সিজেন পায় না এবং অনেক কোষ মারা যায়।
Reviews
There are no reviews yet.